Follow Us

Responsive Advertisement

propelller push

Responsive Advertisement


কাজী নজরুল ইসলামঃজন্ম(২৫ মে ১৮৯৯ সালে)

                                          মৃত্যুঃ(২৯ আগস্ট ১৯৭৬





কাজী নজরুলের জন্ম হয় ২৪শে মে ১৮৯৯ সালে, বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার অন্তর্গত চুরুলিয়া গ্রামে |তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক। তাঁর বাবার নাম ছিলো কাজী ফকির আহমদ এবং মায়ের নাম ছিলো জাহেদা খাতুন | কবি ছিলেন তাদের ষষ্ঠতম সন্তান |ছোটবেলায় তাঁর ডাকনাম ছিলো “দুখু মিয়া” যা পরবর্তীকালে সাহিত্য জগতে তাঁর ছদ্মনাম হয়ে ওঠে | 

কাজী নজরুলের বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে।তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।

নজরুল এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর পারিবারিক অবস্থা  তেমন একটা ভালো ছিল না | চরম দারিদ্রের মধ্যেই তাঁর বাল্য, কৈশর ও যৌবন বয়স কাটে ।কিন্তু দারিদ্র্যতা তার সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাড়াতে পারেনি।তিনি ছোটকাল থেকে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।মসজিদে ইমামতি,থিয়েটার,সেনাবাহিনী বিভিন্ন ধরনের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। 

শিক্ষা জীবনঃ

তার বয়স মাত্র নয় বছর তখন তার পিতার মৃত্যু হয়। পিতার মৃত্যুর পর পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে তার শিক্ষাজীবন বাধাগ্রস্ত হয় এবং মাত্র দশ বছর বয়সে জীবিকা অর্জনের জন্য কাজে নামতে হয় তাকে।জীবিকা  নির্বাহের পাশাপাশি নজরুল মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

কর্মজীবনঃ

প্রথমে তিনি স্থানীয় এক মসজিদে মুয়াযযিন হিসেবেও কাজ করেছিলেন। কৈশোরে বিভিন্ন থিয়েটার দলের সাথে কাজ করেন।এরপর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষদিকে নজরুল সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। করাচি সেনানিবাসে সৈনিক জীবন কাটাতে শুরু করেন।তিনি সেনাবাহিনীতে ছিলেন ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষভাগ থেকে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে যুদ্ধ শেষ হলে ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্ট ভেঙে দেয়া হয়।এরপর তিনি সৈনিক জীবন ত্যাগ করে কলকাতায় ফিরে আসেন এবং  ৩২ নং কলেজ স্ট্রিটে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিসে বসবাস শুরু করেন।এখান থেকেই তার সাহিত্য-সাংবাদিকতা জীবনের মূল কাজগুলো শুরু হয়।। প্রথম দিকেই মোসলেম ভারতবঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকাউপাসনা প্রভৃতি পত্রিকায় তার কিছু লেখা প্রকাশিত হয়।

পারিবারিক জীবনঃ

১৯২১ সালে একবার কবি নজরুল ইসলাম, মুসলিম সাহিত্য সমিতির  গ্রন্থ প্রকাশক আলী আকবর খানের সাথে কুমিল্লার বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে যান | আর সেখানেই তিনি প্রমীলা দেবীকে প্রথমবার দেখেন | যার সাথে পরে তিনি প্রেম করেন এবং পরবর্তীকালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধও হন |

কিন্তু এর আগে নজরুলের বিয়ে ঠিক হয়, আলী আকবর খানের শালী নার্গিস আসার খানমের সাথে | বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর আলী আকবর খান তাঁকে শর্ত দেন ঘরজামাই হিসাবে থাকার জন্য, যেই শর্ত তিনি মোটেই মানেননি |

এই বিদ্রোহী কবি ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে তিনি বাকশক্তি হারিয়ে  ফেলেন। তার অসুস্থতা সম্বন্ধে সুষ্পষ্টরূপে জানা যায় ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে। এরপর তাকে মূলত হোমিওপ্যাথিক এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু এতে তার অবস্থার তেমন কোন উন্নতি হয়নি। সেই সময় তাকে ইউরোপে পাঠানো সম্ভব হলে নিউরো সার্জারি করা হত। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি।অবশেষে অসুস্থ থাকা অবস্থায় ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দে মৃত্যু বরন করেন।


Post a Comment