Follow Us

Responsive Advertisement

propelller push

Responsive Advertisement

বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করার শিক্ষাগত, শারীরিক ও অন্যান্য যোগ্যতা পূরণ করতে পারলে আপনি যে বিষয়েই স্নাতক/স্নাতকোত্তর করুন না কেন, সাধারণ ক্যাডার তালিকার সবই পছন্দক্রমে রাখতে পারবেন। কিন্তু প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল ক্যাডার তালিকা থেকে কোন কোন ক্যাডার পছন্দ তালিকায় রাখার সুযোগ পাবেন, তা নির্ভর করবে আপনার স্নাতকে পঠিত বিষয়ের ওপর। যেমন—এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করা প্রার্থীরা প্রফেশনাল ক্যাডার হিসেবে শুধু স্বাস্থ্য ক্যাডার পছন্দের তালিকায় রাখতে পারবেন। কিন্তু পরিসংখ্যান বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করা প্রার্থীরা প্রফেশনাল ক্যাডার হিসেবে পরিসংখ্যান ও শিক্ষা ক্যাডার রাখতে পারবেন। আবার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করা প্রার্থীরা টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডার তালিকায় গণপূর্ত, সড়ক ও জনপথ, রেলওয়ে প্রকৌশল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল প্রভৃতি ক্যাডার রাখতে পারবেন।বিসিএস পরীক্ষার মূল ধাপ তিনটি। ২০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতির প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, এরপর ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং ২০০ নম্বরের ভাইভা। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব চাকরিপ্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। পরবর্তী সময়ে লিখিত পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বরপ্রাপ্ত প্রার্থীরা ভাইভায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। ভাইভায়ও পাস নম্বর শতকরা ৫০ ভাগ। লিখিত ও ভাইভায় প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে একটি মেধাতালিকা তৈরি করা হয় ক্যাডার বণ্টনের জন্য।

বিসিএস ক্যাডার লিস্ট :


১. বিসিএস(প্রশাসন)
২. বিসিএস (খাদ্য)
৩. বিসিএস (কৃষি)
৪. বিসিএস (বন)
৫. বিসিএস (মৎস্য)
৬. বিসিএস (পশুপালন)
৭. বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা)
৮. বিসিএস (কারিগরি শিক্ষা)
৯. বিসিএস (অর্থনীতি)
১০. বিসিএস (বাণিজ্য)
১১. বিসিএস (পরিসংখ্যান)
১২. বিসিএস (গণপূর্ত)
১৩. বিসিএস (জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল)
১৪. বিসিএস (সড়ক ও জনপথ)
১৫. বিসিএস (নিরীক্ষা ও হিসাব)
১৬. বিসিএস (শুল্ক ও আবগারী)
১৭. বিসিএস (কর)
১৮. বিসিএস (পররাষ্ট্র বিষয়ক)
১৯. বিসিএস (স্বাস্থ্য)
২০. বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা)
২১. বিসিএস (তথ্য)
২২. বিসিএস (ডাক)
২৩. বিসিএস (পুলিশ)
২৪. বিসিএস (আনসার)
২৫. বিসিএস (রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক)
২৬. বিসিএস (রেলওয়ে প্রকৌশল)
২৭. বিসিএস (সমবায়)



পররাষ্ট্র ক্যাডারঃ



সুবিধা-অসুবিধা সমূহঃএই ক্যাডারে সাধারণত খুব কম খালি পোস্ট থাকে তাই প্রতিযোগিতা সবচেয়ে বেশি।জয়েন করার পর থেকে ঢাকায় পররাস্ট্র মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং , বিদেশে পোস্টিং হতে অন্তত ৬-৭ বছর বা কাছাকাছি লাগে , বিদেশে পোস্টিং হলে কূটনৈতিক সুবিধাসমূহ পাওয়া যায়।উচ্চ পদে গেলে এলিট জীবন যাপন করা যায় ,বিদেশে পরিবার এমনকি চাকর পর্যন্ত নেয়া যায় এবং পরিবার সদস্যরা কূটনীতিক না হয়েও কূটনীতিকের মত মর্যাদা সুবিধা ভোগ করেন।উচ্চ শিক্ষার সুযোগ অনেক ভাল, বর্তমান পররাস্ট্র সচিব একজন হার্ভার্ড গ্র্যাজুয়েট। উচ্চ শিক্ষা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে জাতিসংঘে প্রেষণে (ডেপুটেশনে) যাওয়ার সুযোগ থাকে।

কাজের চাপ তুলনামুলক বেশি; সৎভাবে উন্নত জীবনযাপন সম্ভব।রাষ্ট্রদূত হয়ে কোন দেশে জয়েন করলে এরা “গার্ড অব অনার” পান যা সাধারণত প্রেসিডেন্ট/ সরকার প্রধানরা পেয়ে থাকেন । এক ফরেন ক্যাডার (বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে কর্মরত), স্কাইপিতে আলাপকালে হাস্যচ্ছলে আমাকে বলেছিল, ফরেন ক্যাডার এমন এক ক্যাডার যাদের ওয়ালেট ফাঁকা কিন্তু ঐ ফাঁকাওয়ালেট নিয়েই তারা সারাবিশ্ব ঘুরে বেরাতে পারে ।


প্রশাসন ক্যাডারঃ


সুবিধা-আসুবিধা সমূহঃচাকুরিতে ঢুকে ডিসি অফিসে কাজ করা লাগে(স্বল্প সংখ্যক অ্যাডমিন ক্যাডার অবশ্য মন্ত্রনালয়ে সহকারি সচিব হিসেবেও কাজ করে থাকেন);
মোটামুটি ৭-৮ বছর পর UNO হওয়া যায়, আর একজন UNO হলে বাংলো ও গাড়ি সুবিধা পাওয়া যায়,উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান/সেমিনার/কর্মশালা ইত্যাদিতে গেস্ট/চীফ গেস্ট হিসেবে যাওয়া লাগে, উপজেলা পর্যায়ে ক্ষমতার ব্যবহার ব্যাপক।
অ্যাডমিন ক্যাডারের সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে ভ্যারিয়েশন , এই ক্যাডারের লোকজন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পান , এমনকি চাকুরি শেষ হলে যোগ্যতা ও দক্ষতার (ও রাজনৈতিক) ভিত্তিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও এরা এগিয়ে (যেমন পিএসসি’র চেয়ারম্যান )।
স্কলারশীপ থাকায় এদের বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ অনেক বেশি, উচ্চ শিক্ষা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাতে প্রেষণে (ডেপুটেশনে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, জাতিসঙ্ঘ, ইউনেস্কো,এডিবি ইত্যাদিতে) যাওয়ার সুযোগ অন্য সব ক্যাডারের চাইতে অনেক অনেক বেশি।
এমনকি, পররাস্ট্র ক্যাডার না হয়েও অনেকে বিদেশে কূটনৈতিক মিশনে কাজ করার সুযোগ পান।এই ক্যাডারে প্রমোশনের ক্ষেত্রে দক্ষতা (উচ্চ শিক্ষা , বৈচিত্র্যময় কাজের অভিজ্ঞতা) সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হিসেবে দেখা হয়।এই ক্যাডারে যারা সাধারণত বেশি দিন চাকুরি করতে পারে(যেমন প্রথম দিকে যারা বিসিএস দিচ্ছেন) তারাই বেশি লাভবান হয় কারণ তাদের উচ্চ পদে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
চাকুরির প্রথম জীবনে (৩-৪ বছর) বৈধ/ অবৈধ বাড়তি আয়ের সুযোগ কম।



পুলিশ ক্যাডারঃ


সুবিধা ও অসুবিধাঃ

১.অন্যান্য ক্যাডারের মতো মূল বেতনের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার ভাতা।যেহেতু অফিসের বাইরে কাজ থাকে বেশি সেক্ষেত্রে বেতনের অতিরিক্ত দৈনিক ভাতা সবচেয়ে বেশি । ঢাকার বাইরে এর হার ৫০০, ঢাকায় ৬৫০ টাকা ।বিশেষ ভাতাও থাকবে যেমন র্যাবে অতিরিক্ত ৭০%, ট্রাফিকে ৩০%, ডিএমপিতে বিশেষ ভাতা প্রায় ৭০%, সি আই ডি, পুলিশ হেডকোয়াটার্সএ ৫০% ইত্যাদি ।

২.বিপন্ন মানুষকে সরাসরি সাহায্যের হাত বাড়ানো ও বিপদমুক্ত করার ক্ষমতা।

৩.রেশনঃ ৪ জনের পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত রেশন দেওয়া হয়।
৪. সার্কেল বা জেলার দায়িত্ব পেলে সুপরিসর- সুসজ্জিত বাংলো পাওয়া যায়। সম্প্রতি পুলিশের জন্য নতুন নতুন আবাসিক প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে।
৫.প্রচুর বিদেশে প্রশিক্ষণ ও ভ্রমণের সুবিধা।

৬. ন্যুনতম তিনবার জাতিসংঘ শান্তি মিশনে যেয়ে বিশ্বশান্তি তে অবদান রাখার পাশাপাশি নিজে কোটিপতি হবার সুযোগ।
৭.মেয়েদের অগ্রাধিকারঃ অনেকেই ভুল ধারনা পোষণ করেন যে, পুলিশের চাকুরী মেয়েদের জন্য উপযুক্ত নয়। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি বাংলাদেশ পুলিশে নারী সদস্যরা যে সম্মান এবং অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন, অন্য কোন পেশায় সে মর্যাদা তারা ভোগ করেন না।

৮.অন্যান্য ক্যাডারদের মতো বিপুল সংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তা এখন উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ গমন করছেন। পুলিশে ট্রেনিং শেষে রাজশাহী বিশ্বদ্যিালয় থেকে পুলিশ সাইন্সে মাস্টার্স দেওয়া হয়। পাবলিক ভার্সিটির একটা মাস্টার্স ডিগ্রী!! কম কি! এছাড়া ও এফ বি আই এর মতো সংস্থার সাথেও পড়াশুনা ও ট্রেনিং এর সুযোগ পাওয়া যায়।
৯.আন্তঃবাহিনী পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ
১০.পদোন্নতি ভাল। ভবিষ্যতে উপরের দিকে পদসংখ্যা বাড়লে পদোন্নতি আরো তরান্বিত হবে।

১১.পদোন্নতি বিষয়ক জটিলতা বিদ্যমান। তবে আশা করা যায় শিগগির এই জটিলতা মিটে যাবে।
১২.স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রেশার গ্রুপের চাপের যে বিষয়টি খুব আলোচিত হয়, তবে আমরা বর্তমানে যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের পথে এগিয়ে চলেছি, সেখানে সকল প্রকার চাপমুক্ত কর্মদক্ষ একটি পুলিশ প্রশাসনই বিদ্যমান থাকবে, নিশ্চিত থাকুন।
১৩.কাজের প্রেসার খুব বেশি। শুক্র-শনি বলে কিছু নেই, কখনো কখনো কর্মক্ষেত্রে ঈদও করতে হতে পারে।
১৪. ছুটি কম।

Post a Comment