Follow Us

Responsive Advertisement

propelller push

Responsive Advertisement
বিসিএস এর প্রধান প্রধান ক্যাডারসমূহের নাম ও সুবিধা অসুবিধা 





প্রশাসন ক্যাডার


#
সুবিধা ও অসুবিধা সমূহঃ

 মফস্বলে পোস্টিং এর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি তাই জনগনের সাথে কাজ করার সুযোগও বেশি।চাকরিতে ঢুকে ডিসি অফিসে কাজ করা লাগে, (স্বল্প সংখ্যক অ্যাডমিন ক্যাডার অবশ্য মন্ত্রনালয়ে সহকারি সচিব হিসেবেও কাজ করে থাকেন)। মোটামুটি ৫-৬ বছর পর UNO হওয়া যায়, আর একজন UNO কে উপজেলা পর্যায়ের সরকার নিয়োজিত ‘রাজা’ বললে মনে হয় কেউ কস্ট পাবে না , কারণ UNO হলে বাংলো ও গাড়ি সুবিধা পাওয়া যায়, উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান/সেমিনার/কর্মশালা ইত্যাদিতে গেস্ট/চীফ গেস্ট হিসেবে যাওয়া লাগে, উপজেলা পর্যায়ে ক্ষমতার ব্যবহার ব্যাপক; ডিসি’রা জেলা লেভেলের প্রশাসক, ডিসি’র কাজ ও সুবিধা সমূহ আশা করি সবাই জানেন। অ্যাডমিন ক্যাডারের সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে ভ্যারিয়েশন, এই ক্যাডারের লোকজন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পান, এমনকি চাকরি শেষ হলে যোগ্যতা ও দক্ষতার (ও রাজনৈতিক) ভিত্তিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও এরা এগিয়ে (যেমন পিএসসি’র মেম্বার/চেয়ারম্যান )। প্রচুর স্কলারশিপ থাকায় বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ অনেক বেশি, উচ্চ শিক্ষা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাতে প্রেষণে (ডেপুটেশনে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, জাতিসঙ্ঘ, ইউনেস্কো, এডিবি ইত্যাদিতে) যাওয়ার সুযোগ অন্য সব ক্যাডারের চাইতে অনেক অনেক বেশি, উল্লেখ্য ডেপুটেশনে অনেক উচ্চ বেতন দেয়া হয় (যেমন জাতিসংঘে প্রারম্ভিক P-5 গ্রেড ইকুইভ্যালেন্ট প্রায় ১ লাখ ডলার)।পররাস্ট্র ক্যাডার না হয়েও অনেকে বিদেশে কূটনৈতিক মিশনে কাজ করার সুযোগ পান, এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেস্টা হওয়ার রেকর্ড ও এই ক্যাডারের লোকের আছে।এই ক্যাডারে প্রমোশনের ক্ষেত্রে দক্ষতা (উচ্চ শিক্ষা , বৈচিত্র্যময় কাজের অভিজ্ঞতা) সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হিসেবে দেখা হয়, আর এই যোগ্যতা না থাকলে রাজনৈতিক প্রভাবে প্রমোশন হয় ,রাজনৈতিক প্রভাব অনেক বেশি ঠিক আছে কিন্তু দক্ষ লোককে প্রায়রিটি দেয়ার উদাহরন ও অনেক আছে (উদাহরনঃ আকবর আলি খান, সাদাত হুসেন ইত্যাদি আরও অনেক) এই ক্যাডারে একি ব্যাচের লোকের ,যেমন উপসচিব হয়ে অবসরে যাওয়ার রেকর্ড আছে তেমনি ঐ ব্যাচেরই একজনের কেবিনেট সচিব হওয়ারও রেকর্ড আছে ,সরকারের সচিব বা সচিব পদমর্যাদার পোস্ট গুলোতে অ্যাডমিন ক্যাডাররাই অধিস্টিত হন (কিছু সেক্টর বাদে)।এই ক্যাডারে কাজের চাপ ভালই তবে দায়িত্ব অনুসারে কাজের চাপ নির্ভর করে। রাজনৈতিক চাপ অনেক বেশি, তাই ইচ্ছার বিরুদ্ধেও অনেক সময় অনেক কাজ করতে হতহতে পারে (যেমন হরতালে মোবাইল কোর্ট)। আবার রাজনৈতিকভাবে মোহরকৃত (সীল মারা) ব্যাক্তিগণের বিরোধী দল ক্ষমতায় এলে OSD হওয়ার রেকর্ড ও প্রচুর । এই ক্যাডারে যারা সাধারণত বেশি দিন চাকরি করতে পারেন (যেমন প্রথম দিকে যারা বিসিএস দিচ্ছেন) তারাই বেশি লাভবান হয় কারণ তাদের উচ্চ পদে (সচিব বা তদূর্ধ্ব) যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, (যদিও প্রমোশন আরও অনেকগুলো প্যারামিটারের উপর নির্ভর করে)।


 কাস্টমস ক্যাডার


 কাস্টমস ক্যাডার এর সুবিধা ও অসুবিধা

একজন কাস্টমস ক্যাডার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অধীন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক ও ভ্যাট অণুবিভাগ, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপীলাত ট্রাইব্যুনাল অথবা সরাসরি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কাজ করেন ।শুল্ক অফিসে অর্পিত প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন,নথিপত্র পরীক্ষা করেন,চোরাচালান রোধে অভিযান চালান,বিনা শুল্কে পণ্য কেনাবেচা বন্ধ করতে বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন,শুল্ক আইন অনুযায়ী পণ্যের শ্রেণী বিন্যাস,নিয়ম অনুযায়ী পণ্যের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ,সমুদ্র, নৌ, রেল ও স্থল বন্দরে বিদেশ থেকে আমদানি ও রপ্তানি কৃত পণ্যের শুল্ক আদায় তদারকি করেন।

কর্মজীবনের শুরুতে একজন সহকারী পরিচালক গ্রেড ৯ অনুযায়ী ৩২-৩৭ হাজার টাকা বেতন পান। এ গ্রেডে সর্বোচ্চ বেতন ৫৩ হাজার টাকা।অন্য সকল ক্যাডারের মত বিসিএস শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারের কর্মকর্তাগণও চাকুরির মেয়াদ ১০ বছর হলে ডিএস পুলে সরকারের উপ-সচিব হবার সুযোগ পান। তারা বিভিন্ন দূতাবাসে ডেপুটেশনে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করতে পারেন। ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে কমিশনার পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তা ৫ বছরের জন্য নিযুক্ত হন।কাস্টমস ক্যাডারে শুরুতে একজন সহকারী কমিশনার হিসেবে কাজে যোগদান করেন। এ পদে আনুমানিক ৫ বছর কাজের পর একজন সহকারী কমিশনার পদোন্নতি পেয়ে গ্রেড-৬ কর্মকর্তা উপ-কমিশনার হন। গ্রেড-৫ অফিসার যুগ্ম কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি হতে আরো ৫ বছর এবং গ্রেড-৪ কর্মকর্তা অতিরিক্ত কমিশনার হতে আনুমানিক ৪ বছর সময় লাগে। পদ খালি থাকা সাপেক্ষে একজন কাস্টমস ক্যাডার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য গুণের বলে বাংলাদেশ কাস্টমস এর মহাপরিচালক বা কমিশনার হন যা একটি গ্রেড-৩ এর পদ। এর পর একজন কাস্টমস ক্যাডার পদ খালি থাকা সাপেক্ষে ক্যারিয়ারের শীর্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য হন।


পররাষ্ট্র ক্যাডার


পররাষ্ট্র ক্যাডারের সুবিধা ও অসুবিধা

 


বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের চাকরি হলে আপনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব হিসেবে যোগদান করবেন। প্রথম অবস্থায় কাজের চাপ অনেক বেশি পাবেন। টাইপিং থেকে শুরু করে সংসদ অধিবেশন চলাকালীন পার্লামেন্টে ডিউটি করতে হতে পারে। আর গাড়ী সার্ভিস বলতে বাসায় যাওয়া আসা করার জন্য মাইক্রোবাস সার্ভিস পাবেন। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় ঢাকার বেইলী রোডে।

চাকরি স্থায়ী হলে আপনাকে দূতাবাসে পদায়নের জন্য বিবেচনা করা হবে। সেখানে থার্ড সেক্রেটারী হিসেবে যোগ দেবেন। ছয় বছর দুই দেশে কাজ করার পর তিন বছরের জন্য ঢাকায় পোস্টিং পাবেন। এভাবে চক্রাকারে চলবে।

দূতাবাসে পদায়ন হলে দেশের নিয়মিত স্যালারীর বাইরে ফরেন ভাতা (মাসে ১২০০ ডলার), বাসা ভাড়া (বছরে ২০০০০ ডলার), দুই জন ছেলেমেয়ের পড়াশুনার খরচ, পরিবারের চিকিৎসার ৯০% খরচ ও বিনোদন ভাতা (মাসিক ৩০০ ডলার) পাবেন। যদিও দেশে আনতে ট্যাক্স দিতে হবে তথাপিও পোস্টিংয়ে থাকা অবস্থায় ট্যাক্স ফ্রি গাড়ী কিনতে পারবেন। দেশী বিদেশী অনেক ট্রেনিং পাবেন। এখান থেকেও ভালো অংকের একটা টাকা পকেটে ভরতে পারবেন।

লোকবল কম বলে পদোন্নতির সুযোগ ভালো । প্রায় সবাই নাকি রাষ্ট্রদূত হয়। রাষ্ট্রদূতরা যেহেতু বিদেশে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে তাই ভালোই সম্মান পাবেন। বিভিন্ন দেশের বড় বড় ব্যক্তিদের সাক্ষাত পাবেন।


 শিক্ষা ক্যাডার

শিক্ষা ক্যাডার এর সুবিধা ও অসুবিধা


চাকুরিতে যোগদানের পর একজন শিক্ষা ক্যাডারভূক্ত কর্মকর্তা দেশের সরকারি কলেজসমূহে প্রভাষক হিসেবে পদায়ন লাভ করে থাকেন। পরবর্তীতে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তারা সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, এবং সর্বশেষ অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করে থাকেন।


 দেশের সকল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, সচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল পদ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ( মাউশি), যা কিনা দেশের সকল সরকারি বেসরকারি হাইস্কুল কলেজ পরিচালনার জন্য সর্বোচ্চ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ; এর মহাপরিচালক, পরিচালক , এবং সকল গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহ জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমী (নায়েম), যা দেশের সকল সরকারি বেসরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষকদের প্রশিক্ষন প্রদানের দায়িত্বে নিয়োজিত; এর মহাপরিচালক, পরিচালক সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহ । জাতীয় কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ( এনসিটিবি), যা দেশের সকল স্কুল কলেজের বই প্রকাশ, পরিমার্জন, পরিবর্ধন এর দায়িত্বে নিয়োজিত; এর চেয়ারম্যান, সদস্যসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পদ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ পদ।শিক্ষা ক্যাডারে যোগদানের পর অনেকদিন মাস্টারি করার পর এই চাকুরী আর ভাল না লাগলে সহযোগী অধ্যাপক হবার পর আপনি চাইলে নির্দিষ্ট কোটার সুবিধা নিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে উপসচিব পদে যোগদান করতে পারেন।অধ্যাপক হবার পর আপনি দেশের কোন একটা কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ লাভের যোগ্যতা অর্জন করলেন। আর অধ্যক্ষ হলেন একটা সরকারি কলেজের সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী, যা বলাই বাহুল্য।

Post a Comment