Follow Us

Responsive Advertisement

propelller push

Responsive Advertisement

 


প্রতিটি শিক্ষিত মানুষের অন্যতম বড় সিদ্ধান্ত পেশা নির্বাচন করা অথবা ক্যারিয়ার ঠিক করা। কীভাবে তিনি তাঁর জীবন অতিবাহিত করবেন বা কোন পেশায় যাবেন তা ঠিক করা। তবে বিভিন্ন রকমের পেশা আমরা দেখতে পাই। যেমন রাজনীতি, ব্যবসা, চাকরি, বিদেশ গমন, সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা ইত্যাদি।বসে বসে দিন অতিবাহিত করার সুযোগ বর্তমানে আমাদের দেশে নেই। মানুষ সাধারণত একটি পেশা নির্বাচনের সুযোগ পেয়ে থাকে।কারো কাছে ব্যবসা অনেক প্রিয় একটি কাজ। কেউ আবার বলবেন, ব্যবসায় অনেক ঝুঁকি আছে আমি বরং চাকরিতেই যাই। এর দ্বারা বোঝা যায়, সব মানুষের কাছে সব পেশা ভালো লাগবে না। এটা স্বাভাবিকও। এখন যাঁরা চাকরি করতে চান তাঁদের মধ্যে আবার দুটি ভাগ আছে। কেউ সরকারি চাকরি করতে চান; কেউবা বেসরকারি চাকরি করতে চান। আবার সরকারি চাকরি যাঁরা চান তাঁদের মধ্যেও দুইটা ভাগ আছে। কেউ ক্যাডার সার্ভিসে যেতে চান; কেউবা নন-ক্যাডার সার্ভিসে। এসব বৈচিত্র্য আমাদের মেনে নিতেই হবে।




ক্যারিয়ার প্ল্যানিং

সুন্দর ও সঠিক পরিকল্পনা করতে পারলে তা অর্জনের পথে অর্ধেক এগিয়ে যাওয়া যায়। আর এ কথা ক্যারিয়ার প্ল্যানিংয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যথাসময়ে সঠিক পন্থায় ক্যারিয়ার প্ল্যানিং করতে না পারলে অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হতে হয়। এখন বিজ্ঞানের যুগ। খুব সহজে যেকোনো বিষয়ে তথ্য আহরণ করা যায়। তাই সবকিছু জেনে ঠিক করা উচিত আপনি কী করবেন।এখানে একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, অতি দ্রুত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন না।আপনি আজ ঠিক করলেন চাকরি করবেন। কিন্তু চার মাস পর বললেন, ব্যবসা করবেন। এতে শুধু আপনার সময় ও মেধার অপচয় হবে,সফলতা আসবে না। যথাসময়ে না ভাবলে আপনার বড় ক্ষতিও হতে পারে। যদি আপনি দেরিতে চাকরিতে যোগদান করেন, তবে আপনি কম সময় চাকরি করার সুযোগ পাবেন। তাই যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নিন কী করতে চান।



কেন বিসিএস ক্যাডার হবেন?


অনেকেরই স্বপ্ন থাকে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার।বাংলাদেশের অন্যতম সম্মানিত পেশা হলো বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস। বর্তমানে জেনারেল ও টেকনিক্যাল বা পেশাগত ক্যাডার মিলিয়ে মোট ২৭টি ক্যাডার আছে। জেনারেল ক্যাডারগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত। যে কেউ আসতে পারেন। তবে টেকনিক্যাল ও পেশাগত ক্যাডারের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা থাকতে হয়। একটা কথা বলা প্রয়োজন, ক্যাডার চয়েসের ক্ষেত্রে আপনার যা ভালো লাগে তা ঠিক করুন। কারণ, চাকরিটা আপনি করবেন। আপনার পছন্দেরও একটা দাম আছে। প্রতি বছর ক্যাডার সার্ভিসের প্রতি শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর চাহিদা বাড়ছে। এর কিছু কারণও আছে। যথা—


ক) উচ্চশিক্ষার সুযোগ অনেক বেশি। ৫ বছরের শিক্ষা ছুটি নেওয়া যায়।

খ) বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। চাকরি শেষে রয়েছে বিশাল পেনশন।

গ) ৫ বছরের জন্য লিয়েন নেওয়ার ব্যবস্থা আছে।

ঘ) প্রশিক্ষণ ও দাপ্তরিক কাজে বিদেশ সফর করার সুযোগ আছে।

ঙ) বর্তমান সমাজব্যবস্থায় বেশ সামাজিক মর্যাদাও আছে।

চ) এখানে দেশ ও দশের সেবা করার সুযোগ তুলনামূলকভাবে বেশি।

ছ) চাকরির নিরাপত্তা আছে। বিশেষ কিছু কারণ ছাড়া চাকরিচ্যুত হওয়ার ভয় নেই।

জ) রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের সঙ্গে সরাসরি অংশ নেওয়ার সুযোগ আছে।

ঝ) গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়।


কিভাবে শুরু করবেন!

বিসিএসের প্রস্তুতির শুরুর দিকে অনেকের মধ্যেই সিরিয়াসনেস দেখা যায় না। তাই মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—নিজেকে ‘পরীক্ষার্থী’ মনে করা। এই পরীক্ষাকে একাডেমিক পরীক্ষার মতো আবশ্যিক মনে করে সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিসিএস সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। তাই প্রার্থীকে অবশ্যই সিরিয়াস হতে হবে। এর জন্য শুরুতেই বইয়ের পড়াশোনার পাশাপাশি সময় ব্যবস্থাপনা, দৈনন্দিন জীবনযাপন—সব কিছুই প্রস্তুতির অনুকূলে আনতে হবে। অতিপ্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া অন্যান্য কাজ থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।

মার্কিন লেখক, বক্তা ও যাজক জন ম্যাক্সওয়েল বলেছেন,
Successful and unsuccessful people do not vary greatly in their abilities. They vary in their desires to reach their potential. অর্থাৎ সফল বা ব্যর্থ ব্যক্তিরা সামর্থ্যের দিক থেকে খুব বেশি ভিন্ন হয় না। তাঁরা শুধু ভিন্ন হয় তাঁদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর আকাঙ্ক্ষায়।

অবসর কাজে লাগান একটানা পড়তে কারোরই ভালো লাগে না। তাই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে কিছুটা অবসর বা বিনোদনও জরুরি।
আপনি এই বিনোদনগুলোকেও বিসিএসের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন। সে সময় আপনি ইউটিউবে বিসিএস সম্পর্কিত ভিডিও দেখতে পারেন, অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য শুনতে পারেন অথবা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বা বাংলা সাহিত্যকেন্দ্রিক মুভি দেখতে পারেন। আমার বিসিএস ভাইভায় কাঙ্গাল হরিনাথকে নিয়ে একটি প্রশ্ন করা হয়। এর সঙ্গে সঙ্গে ‘মনের মানুষ’ চলচ্চিত্রের কথা আমার মাথায় আসে। সেখানে হরিনাথের একটি দৃশ্য আছে। প্রশ্নের উত্তরটি আমি ঠিকভাবে দিই।
তাই এ বিষয়গুলো প্রিলি, রিটেন, ভাইভা যেকোনো পরীক্ষায়ই আপনাকে সাহায্য করতে পারে। তাই এ ধরনের সুস্থ বিনোদন চর্চা করুন, যা আপনার বিসিএস প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হবে।


বাংলা 

বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির ক্ষেত্রে প্রথমেই আসে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় এ অংশের পূর্ণমান ৩৫। এর মধ্যে সাহিত্যে ২০ এবং ভাষা তথা ব্যাকরণ অংশে ১৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে। সাহিত্য অংশের ২০ নম্বরের মধ্যে ০৫ নম্বর প্রাচীন ও মধ্যযুগ এবং ১৫ নম্বর আধুনিক যুগের সাহিত্য থেকে আসে। এ অংশের প্রস্তুতির জন্য বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসবিষয়ক কোনো বই পড়তে পারলে ভালো হয়। তবে সময়স্বল্পতা ও মনে রাখার ক্ষেত্রে তা অনেকের জন্যই দুষ্কর। তাই বাজারের যেকোনো গাইড বই থেকে এ অংশ ভালোভাবে মুখস্থ করতে হবে। আর কিছুদিন পর পর রিভিশন করতে হবে; কারণ এ অংশ পড়ার চেয়ে ভোলা বেশি সহজ। সঙ্গে নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে কবি-সাহিত্যিকদের সাহিত্য কর্মগুলোর নাম পড়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে যেসব কবি-সাহিত্যিকদের ওপর সচরাচর বেশি প্রশ্ন আসে (যেমন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মীর মশাররফ হোসেন, বেগম রোকেয়া, দীনবন্ধু মিত্র, জসীমউদদীন, কায়কোবাদ প্রমুখ), তাঁদের সাহিত্যকর্মের ব্যাপারে বিশেষ জোর দিতে হবে। সমসাময়িক কবি-সাহিত্যিকদের ক্ষেত্রেও একই কৌশল প্রযোজ্য। ব্যাকরণ অংশের সিলেবাসে প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, বানান ও বাক্য শুদ্ধি, পরিভাষা, সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ, ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, পদ, বাক্য, প্রত্যয়, সন্ধি ও সমাস অন্তর্ভুক্ত আছে। এগুলোর জন্য নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বোর্ড বই থেকে বিষয় ধরে ভালোভাবে পড়তে হবে। প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, বানান ও বাক্য শুদ্ধি, বাক্য পরিবর্তন, শব্দ গঠন—এ টপিকস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসেও অন্তর্ভুক্ত। তাই এগুলো উচ্চ মাধ্যমিকের কোনো ব্যাকরণ বই থেকে পড়তে পারলে আরও ভালো। তবে অন্ততপক্ষে নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড বইটা অবশ্যই পড়া উচিত ; সঙ্গে কোনো গাইড থেকে বিগত বছরের বিভিন্ন প্রশ্ন (বিশেষত প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার) ভালোভাবে সমাধান করতে হবে।


ইংরেজি

ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের ৩৫ নম্বরের মধ্যে সাহিত্যে ১৫ এবং ভাষা তথা গ্রামার অংশে ২০ নম্বর বণ্টিত আছে। সাহিত্যের জন্য কোনো একটা গাইড বই থেকে বিগত সালের প্রশ্নের আলোকে দাগিয়ে পড়তে হবে। যেসব বিষয় থেকে বেশি প্রশ্ন হয়, যেমন- শেকসপিয়ার, রোমান্টিক যুগের কবি, বিভিন্ন যুগের বিস্তারকাল ও সাহিত্যগত বৈশিষ্ট্য, ইংরেজি সাহিত্যের ছন্দ ও অলংকার, বিভিন্ন বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকদের পঙ্ক্তি ও উদ্ধৃতি প্রভৃতি খুব গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে এবং বারবার রিভাইজ করতে হবে।

 

Post a Comment